নাজমুল হোসাইন, শেরপুর প্রতিনিধিঃ
শেরপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও জেলা কুড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান ওরফে (সোহাগ) তালুকদার (৪২) কে কুপিয়ে আহত করেছে স্থানীয় প্রতিপক্ষ।
১৭ এপ্রিল বুধবার রাত ৯ টায় শহরের দীঘারপাড় এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্বার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাত ১১ টার দিকে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সোহাগ তালুকদার স্থানীয় আব্দুল আওয়াল মাস্টারের একমাত্র পুত্র এবং ৩ সন্তানের জনক।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে আহত শিক্ষানবীশ আইনজীবী ও ব্যবসায়ী নেতা সোহাগ তালুকদারের গুরুতর অবস্থা দেখেন। তিনি সোহাগের স্বজন ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের ঘটনার বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন ও জড়িতদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেন।
জানা যায়, পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচন ও আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবত দীঘারপাড় মহল্লার সাবেক কাউন্সিলর আমির হোসেন বাদশা তালুকদার ও ফখরুল আলম ফখরুলের বিবাদমান দু‘বলয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ঈদুল ফিতরের আগে ঈদগাহ মাঠের মেয়াদ উত্তীর্ন কমিটিকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে এবং উভয় পক্ষে তা মামলা – মোকদ্দমায় গড়ায়।
পরে জেলা পুলিশ ও থানা পুলিশের প্রচেষ্টায় একাধিক দফায় সমঝোতা বৈঠকের পর উভয়পক্ষ শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকবে মর্মে থানায় মুচলেকা দেয় এবং পৃথক মাঠে ঈদের নামায আদায় করে। ওই অবস্থায় বুধবার রাত ৯টার দিকে বাদশা তালুকদারের ভাতিজা সোহাগ তালুকদার দীঘারপাড় মধ্যপাড়া কলোকলো বাজারস্থ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় ফখরুল আলম ফখরুলের বাড়ির সামনের রাস্তায় পৌছলে ফখরুলের নেতৃত্বে তার সহযোগী ১০/১২ জন যুবক দেশীয় অস্ত্র চাপাতি, ক্ষুর, ডেগার ও লোহার রড নিয়ে তাকে থামিয়ে ঘেরাও করে ফেলে। ওইসময় তারা সোহাগ তালুকদারের মাথায়, হাতে, পায়ে ও পিঠে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঘটনার বিষয়ে সাবেক কাউন্সিলর বাদশা তালুকদার জানান,
ঈদের আগের ঘটনা নিয়ে সমঝোতা বৈঠকের পর আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকলেও আজ ফখরুলের নেতৃত্বে তার লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ভাতিজা সোহাগ তালুকদারকে কুপিয়েছে। সে এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বার বার ঘটনা ঘটানোর পরও বিশেষ প্রভাবে থাকা ফখরুলদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না। মামলা-হামলার শিকার হতে হয় আমাদের। তিনি ওই ঘটনায় জড়িত ফখরুলসহ সকলকে গ্রেফতারের দাবি জানান। একই দাবি জানিয়ে জেলা কুড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি উজ্জলুর রহমান উজ্জল, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মুসা মিয়া ওই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ওই ঘটনা শুনার পর হাসপাতালে আহত সোহাগ তালুকদারকে দেখতে গিয়েছি এবং তার অবস্থা দেখার পাশাপাশি কথাবলার চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুপক্ষের দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
0 $type={blogger}:
Post a Comment