রোকনুজ্জামান সবুজঃ
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পরকীয়া করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন সরিষাবাড়ী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল মোশারফ হোসেন ।
রবিবার (২৪ডিসেম্বর) রাতে পৌরশহরে চর বাঙালি দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
এ ঘটনায় সোমবার ২৫ ডিসেম্বর সকালে কাউন্সীলর মোশারফ হোসেনের বহিষ্কারের দাবীতে স্থানীয় এলাকাবাসীর আয়োজনে চন্দনপুর থেকে একটি মিছিল শুরু হয়ে পঞ্চপীর মোড় প্রদক্ষিণ করে মেয়র মনির উদ্দিনের বাড়ীতে গিয়ে মিছিলটি শেষ করে এলাকাবাসী। মিছিলে প্রায় ২শতাধিক নারী পুরষ অংশ নেয়। ঘটনার পর থেকেই নানা আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় এলাকাবাসীদের মধ্যে। স্থানীয় সরকার বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করে কাউন্সিলর মোশারফকে অব্যাহতির দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল। লিখিত আবেদন পেলে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ সচিব আব্দুর রহমান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার ২৪ ডিসেম্বর রাতে পৌরসভার চর বাঙালি দক্ষিণ পাড়া গ্রামে মৃত ইউসুফ আলীর বাড়িতে যায় কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন।
সে মা ও শিশু ভাতা কার্ড করে দেওয়া নামে দুই সন্তানের জননী ফাতেমা বেগমকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়। এতে ফাতেমা রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন প্রলোভন দেখায় এবং তার দুই সন্তানকে এসিড দিয়ে পুড়ে মারার হুমকি দেয়। পরে ফাতেমা বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে
তার পরিবারের লোকজন কাউন্সিলর কে তাদের বাড়িতে আসতে নিষেধ করে। তবুও সে বিভিন্ন অযুহাতে ফাতেমাদের বাড়িতে আসে এবং তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে চায়। এ সময় এলাকার লোকজন তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং গণধোলাই দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। পরে এ সংবাদ পেয়ে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং তাকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পৌর মেয়র মনির উদ্দিন ঘটনাস্থলে পৌছে এলাকাবাসীর দাবী শুনে কাউন্সিলর মোশারফকে পৌরসভা কার্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেন।
এলাকাবাসী বলেন, কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন ইতিপূর্বেও একাধিক নারী গঠিত ঘটনায় ধরা খেয়ে গণধোলাই খেয়েছেন। তবুও সে একের পর এক এই ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছেন।
এদিকে সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মালেক বলেন, এই ধরনের জঘন্য ও অসামাজিক কার্যকলাপে যে সকল পৌর কাউন্সিলর লিপ্ত থাকে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার (ভারপ্রাপ্ত) ওসি মুশফিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং কাউন্সিলর মোশারফ হোসেনকে উদ্ধার করে। পরে পৌর মেয়র ঘটনাস্থলে এসে কাউন্সিলরের দায়িত্ব নিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। ভিকটিমের কোন অভিযোগ না থাকায় মামলা নেওয়া হয়নি। তবে অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী পৌর মেয়র মনির উদ্দিন জানান, আমি সংবাদ পেয়েই তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে এবং এলাকার জনগণের বেগতিক পরিস্থিতি দেখে পৌর কাউন্সিলর মোশারফ হোসেনকে তৎক্ষণাৎ মৌখিকভাবে পৌরসভা হতে সাময়িক বরখাস্ত করেছি।বিষয়টি নিয়ে আমরা পৌর পরিষদ বসে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে তিনি চিঠি লিখবেন বলে জানান ।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ সচিব আব্দুর রহমান মুঠোফোনে জানান, লিখিত ভাবে এখনো কেউ জানায়নি। লিখিত ভাবে আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নিব।
0 $type={blogger}:
Post a Comment