রোকনুজ্জামান সবুজঃ
স্থানীয় ভাবে বিচার না পেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের কাছে বিচার চাইলেন জামালপুর-শেরপুর জেলার সংরক্ষিত আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হোসনে আরা।
সভা চলাকালে দলীয় কার্যালয়ে স্থানীয় এমপি ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলালের উপস্থিতিতে নেতৃবৃন্দের সামনে লাঞ্ছিতের ঘটনার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বিচারের কোন আশ্বাস না পেয়ে তিনি দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু তার নিজ এলাকা ইসলামপুর উপজেলার কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ড এমনকি দলীয় বর্ধিত সভাতেও তাকে ডাকা হয়না। সম্পৃক্ত করা হয়না রাজনৈতিক কোন কর্মকান্ডে। এমনকি স্থানীয় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি’র বিরাগভাজন হওয়ার ভয়ে অনেক নেতা-কর্মী তার আয়োজিত ১৫ আগস্টের শোক সভাতেও অংশ নেননি।
তিনি বলেন, কোন ধরণের আমন্ত্রণ ছাড়াই গত ১৭ আগস্ট উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত “নৃশংস বর্বরোচিত সিরিজ বোমা হামলা দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় হাজির হন তিনি। রাত ৮টা দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি’র সভাপত্বিতে ইসলামপুর দলীয় কার্যালয়ে সভা শুরু হয়। এ সময় তুচ্ছ বিষয়ে আলোচনার জের ধরে উপজেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। তিনি এর মৃদু প্রতিবাদ করলে ওই নেতা তেড়ে এসে তাকে থাপ্পর মারেন এবং শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
এ সময় এমপি ফরিদুল হক খান দুলাল ওই নেতাকে নিবৃত না করে উল্টো তাকেই (এমপি হোসনে আরাকে) ধমক দেন।
এক পর্যায়ে তিনি (এমপি হোসনে আরা) দ্রুত সভাস্থল ত্যাগ করেন।
এমপি হোসনে আরা সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য এমপি ফরিদুল হক খান দুলাল তার অনুগত নেতাদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি করে দেন। যে কমিটির কেউ কেউ তদন্ত শুরুর আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ঘটনাকে ভিত্তিহীন দাবি করে স্ট্যাটাস দেন। ঘটনার পর সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় বাধ্য হয়েই তিনি প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে বিচারের আবেদন করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের সদস্য ছাড়াও তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী। তার লাঞ্ছিতের ঘটনায় স্থানীয় এমপি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলালও দায় এড়াতে পারেন না বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে কথা বলতে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলালের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, এমপি হোসনে আরা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ তিনিও পেয়েছেন। তিনি বলেন, ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল হামিদকে আহবায়ক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ মোখলেছুর রহমানকে সদস্য সচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক আ.ব.ম জাফর ইকবাল জাফুকে সদস্য করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করে জেলা আওয়ামীলীগ বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।
0 $type={blogger}:
Post a Comment