মেলান্দহে ছয় মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি কাউন্সিলর ৭ মাসেও হয়নি গ্রেপ্তার

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধিঃ

জামালপুরে মেলান্দহ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের সদ্য বহিষ্কৃত কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল ফারুক ছয় মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে ৭ মাস আগে সাজাপ্রাপ্ত হলেও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

ওই কাউন্সিলর ৬ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় গত জুন মাসের ১৮ তারিখ কাউন্সিলর পদ থেকে অপসারণ করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়,’ আব্দুল্লাহ আল ফারুক শাহজাদপুর এলাকায় ভাই ভাই ব্রিকস নামে একটি ইট ভাটার কার্যক্রম শুরু করেন। ২০২০ সালে সেই ইট ভাটা দেখিয়ে এবং ইট বিক্রির কথা বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে কাউন্সিলর ফারুক অগ্রিম প্রায় ৪ কোটি টাকা নেন। পরবর্তীতে কাউকে ইট এবং টাকা ফেরত দিতে পারেনি। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ভুক্তভোগী শাজাহান নামে একজনকে তার ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে ফারুক একটি ব্যাংকের চেক দেন। পরবর্তীতে ব্যাংকে চেক জমা দিলে ফারুকের ব্যাংক একাউন্টে টাকা না থাকায় চেক ডিজঅনার হয়।

এসময় আরো কয়েকজন ভুক্তভোগীকে চেক দিয়েছিল সবগুলো চেক ও ডিজঅনার হয়। পরবর্তীতে তিনি এলাকা থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণা সহ চেক জালিয়াতির মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।

আব্দুল্লাহ আল ফারুকের নামে ৭ জন ভুক্তভোগী সাতটি মামলা দায়ের করেন। এরমধ্যে ৬ টি মামলায় রায় হয়েছে।
মামলার নথিতে দেখা যায়,’ শাজাহান নামে একজন ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলায় আব্দুল্লাহ আল ফারুকের ৮ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের নির্দেশ দেন জামালপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গত বছরের ১৭ অক্টোবর ২০২২ সালে বিচারক মো. হুমায়ুন কবির তিনি এ রায় দেন।

ভুক্তভোগী নাজমুল, আসাদুজ্জামান, সুলতান, রবিউল ইসলাম, রেজাউল ইসলামের দায়েরকৃত মামলায় আব্দুল্লাহ আল ফারুককে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন আদালত।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আব্দুল্লাহ আল ফারুকের নামে মেলান্দহ থানায় ৭ মাস আগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আদেশ আসলেও পুলিশ গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফারুককে দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশ সুপার ও থানায় অনেকবারই গিয়েছেন ।

ভুক্তভোগী আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন,’ আমার টাকা ফেরত চাইলে ফারুক আমাকে চেক দেন। চেক ব্যাংকে জমা দিলেন চেক ডিজঅনার হয়। পরে আমি মামলা দায়ের করি। মামলায় রায় হয়েছে। ফারুকের গ্রেপ্তার করার জন্য আমরা পুলিশ সুপারের কাছে গিয়েছি, মাদারগঞ্জ সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপারের কাছে গিয়েছিলাম ওসির কাছে কয়েকবার ঘুরেছি তাও গ্রেপ্তার হচ্ছে না ফারুক।

মেলান্দহ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন,’আব্দুল্লাহ আল ফারুকের নামে একাধিক মামলা থাকায় তার পদে থেকে অপসারণ করা হয়েছে এবং ওই ওয়ার্ডের  উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুলাই পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচন হবে।

এ বিষয়ে জামালপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মাদারগঞ্জ সার্কেল) স্বজল কুমার সরকার বলেন,’আমরা তাকে খুঁজতাছি। গ্রেপ্তার করার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত গ্রেপ্তারের আওতায় আসবে।

Share on Google Plus

About মোঃ সাইদুর রহমান সাদী

নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন; মোবাইল : 01901450501 - সংবাদ/বিজ্ঞাপন প্রকাশের জন্য যোগাযোগ করুন - iamsadi49@gmail.com

0 $type={blogger}:

Post a Comment