জামালপুর দর্পণ ডেস্ক:
[ সূচনা পর্ব ]
পিরি'য়ড অব'স্থায় বি'য়ের সা'জে ব'সে আ'ছে তে'রো বছ'রে ছো'ট্ট বা'লিকা নাঈ'মা। হঠা'ৎ ক'রেই তা'র পিরি'য়ড শু'রু হ'য়ে গে'লো। নাঈ'মা পিরি'য়ডের অ'সহ্য যন্ত্রণা'য় পে'টে হা'ত দি'য়ে কাত'রাতে থা'কে। নাঈ'মার চো'খ থে'কে অ'ঝো'রে পা'নি পড়'ছে। মেয়ে'টা কাও'কে কি'ছু বল'তেও পার'ছেনা। নাঈ'মার এম'ন অ'বস্থা দে'খে তা'র মা শিউ'লি বে'গম এগি'য়ে আ'সে। শি'উলি বে'গম নাঈ'মার মা'থায় হা'ত রে'খে ব'লল -- মা কি হয়ে'ছে তো'র?
ঘ'রে নি'য়ে শি'উলি বেগ'ম নাঈ'মাকে বল'ল -- কি'রে তো'র কি কি'ছু হয়ে'ছে না'কি?
তখ'ন নাঈ'মা ব'লল -- মা আ'মার পিরিয়'ড শু'রু হয়ে'ছে। পে'টে অস'হ্য ব্য'থা কর'ছে। আ'মি এই ভা'বে বি'য়ে কর'তে পার'বোনা। তুমি এক'টু বুঝা'র চে'ষ্টা ক'রো।
শিউ'লি বে'গম বু'ঝতে পা'রে ব্যা'পার টা কি'ন্তু তার তো কি'ছুই ক'রার নাই। সে চাই'লেও বিয়ে'টা ভে'ঙে দি'তে পা'রেনা। হটা'ৎ ক'রে শো'না যা'য় ব'র এসে'ছে। ব'র এসে'ছে ক'থাটা শু'নে নাঈ'মা আঁত'কে উঠ'ল। তা'র মনে'র ভি'তরে ভ'য় ঢু'কে গে'লো। নাঈ'মা কা'ন্না কর'তে কর'তে তা'র মা'কে ব'লল - মা তু'মি বিয়ে'টা ভে'ঙে দা'ও প্লি'জ। আ'মি এ'ই অব'স্থায় বি'য়ে কর'তে পার'বোনা।
তখন'ই ঘ'রে চ'লে আ'সে নাঈ'মার বা'বা মিজা'ন সা'হেব। 'মিজান সাহে'ব ঘ'রে এ'সে দে'খে নাঈ'মা কা'ন্না ক'রছে। ত'খন মি'জান সাহে'ব নাঈ'মার দি'কে এগি'য়ে আ'সে আ'র বল'তে থা'কে -- মা'রে মেয়ে'দের আ'সল ঠি'কানা হ'লো তা'র শ্বশু'র বা'ড়ি। স'ব মেয়ে'দের এ'টা মে'নে নি'তে হ'য়।
মিজা'ন সা'হেব আ'সল ঘটনা'টা বুঝ'তে পারে'নি। নাঈ'মা তা'র বাবা'কে কি'ছু বলতে'ও পার'ছেনা। বাবা'কে সে ক'রে বল'বে তা'র কি হ'য়েছে। ত'খন শি'উলি বে'গম মি'জান সাহে'বকে নি'য়ে অ'ন্য রু'মে চ'লে গে'লো আ'র তা'কে সব কিছু'ই খু'লে বল'ল। মি'জান সা'হেব এ'মন ক'থা শু'নে অবা'ক হ'য়ে গে'লো। কি'ন্তু কি ক'রা যা'য় সে বুঝ'তে পারছে'না। মি'জান সা'হেব অনে'ক্ষন চেয়ারে'র উপ'রে ব'সে থে'কে ভাব'তে থা'কে। আ'র য'দি এ'খন বি'য়েও ভে'ঙে দে'য় তা'হলে তো আ'র কে'উ নাঈ'মাকে বিয়ে'ও কর'বেনা। সবা'ই ভাব'বে নাঈ'মার কো'নো সম'স্যা আ'ছে। আ'র নানা'জন নানা'ন ক'থা বল'বে। তা'ই মি'জান সা'হেব স'ব চি'ন্তা বা'দ দি'য়ে তা'র স্ত্রী'কে ব'লল -- তো'মার মেয়ে'কে বি'য়ের জ'ন্য প্রস্তু'তি নি'তে ব'লো।
এ'ই ক'থা ব'লে মি'জান সা'হেব চ'লে গে'লো। শিউ'লি বে'গম তা'র স্বা'মীর এ'মন ব্যব'হার দে'খে মো'টেও অবা'ক হলো'না কা'রণ সে জা'নে। মিজা'ন সাহে'ব যে'টা ব'লে সেটা'ই ক'রে। তার'পর শিউ'লি বেগ'ম নাঈ'মার রু'মে চ'লে যা'য়।
অ'ন্য দি'কে দে'খা যা'য়। নাঈ'মার হবু স্বা'মী রা'কিব বরযা'ত্রী নি'য়ে না'ঈমা'দের বা'সায় চ'লে আ'সছে। মিজা'ন সা'হেব সবা'ইকে এ'নে প্যা'ন্ডেলের ভিত'রে বসা'লো। রাকি'ব এ'ই বি'য়ের জ'ন্য মো'টেও প্র'স্তুত ছিল'না। এক ক'থা বল'তে গে'লে তা'কে জো'র জড়'ধস্তু করে'ই বি'য়ে করা'নো হচ্ছে'। রাকি'বের বাবা-মা জো'রে করে'ই তা'কে বি'য়ে দি'চ্ছে। মি'জান সা'হেব স'বার সা'থে ক'থা ব'লে পরি'চয় হ'য়ে নি'ল।
এ'ই দি'কে না'ঈমা মা তা'র রু'মে এ'সে দে'খে নাঈ'মা ব'সে আ'ছে। না'ঈমা তা'র মা'কে দে'খে বল'ল -- মা বা'বা কি ব'লল? বি'য়েটা কি ভে'ঙে দিয়ে'ছেন?
শি'উলি বে'গম ব'লল -- না মা, তো'র বাব'কে তো চি'নিস তি'নি এ'ক কথা'র মা'নুষ। যা কি'ছু হ'য়ে যা'ক তি'নি তা'র কথা'র নড়'চড় হ'তে দিবে'না।
-- মা, তো'মরা কে'ন এ'তো তাড়া'তাড়ি আ'মার বিয়ে' দি'তে চা'ইছ? আ'মি কি তো'মাদের কা'ছে অনে'ক বো'ঝা হয়ে গি'য়েছি? আ'মার 'তো এখ'ন পড়া'শোনা করা'র বয়'স আমি' এই বয়'সে কি ভা'বে এক'টা সংসা'র সামলা'বো? বা'বা কে বলো'না বিয়ে'টা ভে'ঙে দিতে' আ'মি এই বি'য়ে কর'তে চা'ই না মা। আবা'র এই দি'কে আমা'র এই অ'বস্থা। আমি কি'ভাবে এ'সব অন্য এ'কটা লোক'কে বলব মা? তু'মি কি'ছু এক'টা ক'রো প্লি'জ।
-- আ'মি আ'র কি বা কর'তে পা'রি? চিন্তা' করি'স না সব ঠি'ক হয়ে যাবে৷
-- মা এক'টা কা'জ ক'রো আমা'কে তো'মরা গ'লা টি'পে মে'রে ফে'লো। আমা'র আ'র এস'ব ভা'লো লাগ'ছে না। আ'মি বুঝ'তে পার'ছি তোম'রা আমা'কে তাড়া'তে চাই'ছ তাই না? আ'মি বিয়ে'র প'রে কিভা'বে একটা অচে'না মানুষ'কে এই সব ব'লব? তার উ'পর ও'নার পু'রো অধি'কার আ'ছে আ'মার উপ'র। যদি'ও আমা'রও আ'ছে তা'র প্র'তি। তবু'ও সে য'দি চা'য় আ'মি কি না কর'তে পার'বো। সে তো আর এ'কটা মেয়ে'র এই অসহ্য'নীয় যন্ত্র'ণার ক'থা টা বুঝ'তে পা'রবে না। সে তো নি'জের ক্ষুধা'টা নিবা'রন কর'বে। এ'তে যে আ'মার জীব'নটা বে'রিয়ে যাও'য়ার মত অ'বস্থা হ'য়ে যা'বে মা ৷ এম'নিতেই আ'মার বয়'স অনে'ক ক'ম। আ'মি কি ভা'বে এ'তো কি'ছু সাম'লে নে'বো?
হ'ঠাৎ ক'রে শি'উলি বে'গমকে ডা'ক দি'লেন তা'র স্বা'মী। সে উঠে চ'লে গে'লো। এ'কা এ'কা রু'মের ম'ধ্যে বসে থা'কে না'ঈমা। মে'য়েটা অ'ঝোরে কা'ন্না কর'তে থা'কে। নাঈ'মা বু'ঝে গিয়ে'ছে তা'র এই বি'য়ে আ'র আট'কানো স'ম্ভব না। তা'কে এই অল্প'বয়সে স্বা'মীর সংসা'র কর'তে হ'বে। শি'উলি বে'গম মিজা'ন সাহে'বের কা'ছে গি'য়ে ব'লল -- মেয়ে'টা অ'নেক কান্না'কাটি কর'ছে। এম'নিতেই মেয়ে'টির ব'য়স অ'নেক ক'ম আ'বার এখ'ন এ'ই অ'বস্থা।
-- কি'ছু ক'রার নে'ই। বরপ'ক্ষ চলে আ'সছে। কাও'কে কো'নো কি'ছু বুঝ'তে দেও'য়া যাবে'না। মে'য়েকে রে'ডি ক'রে নি'য়ে আ'সো তাড়া'তাড়ি। বরপ'ক্ষ অ'পেক্ষা ক'রে ব'সে আ'ছে। সম'য় ন'ষ্ট ক'রে লা'ভ নে'ই যা'ও নাঈ'মাকে নি'য়ে আ'সো।
এই ক'থা বল'তে ব'লতে মি'জান সাহে'ব চ'লে গে'লেন। কিছু'ক্ষণ প'রে নাঈমা'কে নি'য়ে প্যান্ডে'লের ভি'তরে চলে আস'লো। নাঈ'মাকে খুব সুন্দ'র ক'রে সাজা'নো হয়ে'ছে। ছো'ট্ট মেয়ে'টাকে অসাধা'রণ সুন্দ'রী লাগ'ছে।নাঈ'মাকে এ'নে রা'কিবের পা'শে বসা'নো হ'লো। পিরিয়'ডের অ'সহ্য যন্ত্র'ণা স'হ্য ক'রে বসে' আ'ছে। এক'টু পর পর পে'টে হাত দি'চ্ছে নাঈ'মা। তারপ'র ইসলা'মিক নি'য়মে তাদে'র বিয়ে' হ'য়ে গে'লো। বি'য়ের স'ব কা'জ শে'ষ ক'রে এখ'ন ক'নে বি'দায় করা'র স'ময় হ'য়ে গিয়ে'ছে। নাঈ'মা তা মা'কে জড়ি'য়ে ধ'রে কা'ন্না কর'তে থা'কে।
শিউ'লি বে'গম তা'র মেয়ে'কে সা'ন্ত্বনা দি'য়ে বল'ল -- মা কা'ন্না করি'স না। আমা'দের ক'থা ম'নে পড়'লেই চ'লে আ'সিস। এটা'ই তো নি'য়ম, সব মে'য়েদের বিয়ে'র প'রে আ'সল ঠিকা'না হলো' তা'র স্বা'মীর বা'ড়ি। আ'মিও তো আ'গে অ'ন্য বা'ড়ির মে'য়ে ছি'লাম। দেখ'বি কিছু'দিন প'রে স'ব ঠি'ক হ'য়ে যা'বে।
তার'পর মি'জান সা'হেব নাঈ'মাকে রা'কিবের হা'তে তু'লে দিয়ে' বল'ল -- বা'বা, না'ঈমা আমা'র এ'ক মা'ত্র মে'য়ে। তু'মি ওঁ'কে দে'খে রে'খো।
এ'ই ক'থা ব'লতে বল'তে মি'জান সাহে'বের চো'খ দি'য়ে পা'নি পড়'তে শু'রু ক'রলো। না'ঈমা তা'র বাবা'কে জ'ড়িয়ে ধ'রে কা'ন্না ক'রতে থা'কে। কি'ছুক্ষণ প'রে নাঈ'মাকে নি'য়ে তা'র শ্ব'শুর বা'ড়ি দি'কে রও'না দিল। ত্রি'শ মিনি'টের ম'ধ্যে রাকি'বের বাড়ি'তে পৌ'ছে গে'লো। দে'খতে দে'খতে রা'ত হ'য়ে গে'লো। রা'ত ১২টা ছুঁ'ই ছুঁ'ই কিন্তু রা'কিব এখ'নো বা'সর ঘ'রে আসেনি। এ'কটা রু'মে ম'ধ্যে এ'কা এ'কা ব'সে আ'ছে নাঈ'মা। প্রা'য় এ'ক ঘ'ন্টা পা'র হ'য়ে গে'লো নাঈ'মাকে বাস'র ঘ'রে এ'নে ব'সিয়ে রেখে'ছে। কি'ন্তু রাকি'বের আ'সার কো'নো না'ম নে'ই। এই দি'কে নাঈ'মার ম'নের ভিত'রে অ'জানা ভ'য় আ'র পিরি'য়ডের অ'সহ্য যন্ত্র'ণা নিয়ে ব'সে আ'ছে। শরী'র টাও ভা'লো লাগ'ছে না। ম'নে এ'তটা আশ'ঙ্কা থাক'তো না। যদি না শরীর'টা ভা'লো থাক'তো। আতঙ্ক'টা ক্ষ'নে ক্ষ'নে বে'ড়েই চ'লেছে। অচে'না এক'জন মানু'ষ। তার উপ'র ও'নার পু'রো অধি'কার আ'ছে আমা'র উ'পর। সে যদি চা'য় আ'মি কি না ক'রতে পা'রবো। সে তো আ'র এক'টা মে'য়ের এই অসহ্য'নীয় যন্ত্র'ণার কথা'টা বুঝ'তে পার'বে না। সে তো নি'জের ক্ষুধা'টা নিবা'রন কর'বে। এ'তে যে আমা'র জীবন'টা বেরি'য়ে যাও'য়ার মত অ'বস্থা হ'য়ে যা'বে। এ'সব ভাব'তে নাঈ'মার ভয় যে'নো বে'ড়েই যা'চ্ছে। হঠাৎ ক'রে কা'রোর আ'শার শব্দ শু'নে বুঝ'তে আ'র বা'কি রই'লো না রা'কিব আস'ছে। দর'জার শব্দ শু'নেই নাঈ'মার বু'কের ভিত'র কেঁ'পে উঠ'লো। ভ'য়ে তার পু'রো শরী'র কা'পতে থাকে। অব'শেষে স'ব অপেক্ষা'র অব'সান ঘটি'য়ে বাস'র ঘ'রে প্রবে'শ কর'লো রা'কিব। '
0 $type={blogger}:
Post a Comment